বছরের সেরা ডিজিটাল ব্রান্ডিং লিডার সম্মাননা অর্জন করলেন দেবাশীষ দাস - সবার জন্য শিক্ষা, লেখাপড়া বিষয়ক বাংলাদেশের প্রথম ব্লগ সাইট।

সাম্প্রতিক

বছরের সেরা ডিজিটাল ব্রান্ডিং লিডার সম্মাননা অর্জন করলেন দেবাশীষ দাস

false
দেশের টেলিভিশন গ্রাফিক্স ও ডিজিটাল ব্র্যান্ডিং জগতে সৃজনশীল নেতৃত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ “স্টার বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড ২০২৫”-এ দেবাশীষ দাস ‘Digital Branding Leader of the Year’ ক্যাটাগরিতে বিশেষ সম্মাননা অর্জন করেছেন। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় কচিকাঁচা মিলনায়তনে আয়োজিত এই জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা সুব্রত চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটি (BMSS)-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান খন্দকার আছিফুর রহমান। এর আগে “এক্সেলেন্স ইন সাকসেস অ্যাওয়ার্ড ২০২৫”-এ দেবাশীষ দাস ভূষিত হন ‘সেরা মোশন গ্রাফিক্স আর্টিস্ট (প্রোগ্রাম ব্র্যান্ডিং)’ সম্মাননায়। ২৬ মে ২০২৫, রাজধানীর অভিজাত স্কাই সিটি ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত সেই অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী শিরীন শীলা এবং কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান লায়ন মো. মুজিবুর রহমান। অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার ছিল একুশে টেলিভিশন। এছাড়া ডিজিটাল মিডিয়া ও টেলিভিশন গ্রাফিক্সে সৃজনশীলতার ধারাবাহিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি অর্জন করেছেন ‘বেস্ট ইন ব্র্যান্ড কমিউনিকেশন ২০২৪’ সম্মাননা, যা প্রদান করেছে স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান লেজার ট্রিট। এই পুরস্কারও তাঁর বহুমাত্রিক সক্ষমতার আরেকটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। দেবাশীষ দাস বর্তমানে মাছরাঙা টেলিভিশনের গ্রাফিক্স বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত। তিনি ২০১১ সাল থেকে এখানে কাজ করে অসংখ্য টিভি প্রোগ্রামের ব্র্যান্ডিং ও ভিজ্যুয়াল পরিচিতিতে এনেছেন অভিনবত্ব। ভিজ্যুয়াল আইডেন্টিটি নির্মাণে তাঁর দক্ষতা, টাইমিং সেন্স ও আর্কিটেকচারাল কম্পোজিশন তাঁকে দিয়েছেন আলাদা উচ্চতা। তাঁর ডিজাইন দর্শন শুধুই টেকনিক্যাল নয়—তাঁর কাজে প্রতিটি প্রোগ্রামের মূল ভাব ও আবেগের নিখুঁত চিত্রায়ন ফুটে ওঠে। ওপেনিং টাইটেল, থিমেটিক অ্যানিমেশন, গ্রাফিক প্যাকেজ, স্ক্রিন লে-আউট এবং স্টোরিবোর্ড নির্মাণে তিনি এনেছেন সৃজনশীলতা ও ধ্রুপদী শৈলীর মেলবন্ধন। মাছরাঙা টেলিভিশনের ধারাবাহিক নাটক, ম্যাগাজিন শো, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বা বিশেষ দিবসের আয়োজন—সবখানেই তাঁর ডিজাইন করা ভিজ্যুয়াল ব্র্যান্ডিং দর্শকদের মনে একটি পরিচিত ও পেশাদার অনুভূতি সৃষ্টি করেছে। প্রতিটি প্রোগ্রামের নিজস্ব রঙ, ফন্ট, মুভমেন্ট ও সাউন্ড সিনক্রোনাইজেশনে তিনি যে সূক্ষ্ম দৃষ্টিভঙ্গি ব্যবহার করেন, তা আজও দেশের গ্রাফিক্স শিল্পে এক মানদণ্ড হয়ে রয়েছে। গ্রাফিক্স ডিজাইনের বাইরেও দেবাশীষ দাস শিক্ষকতা ও প্রশিক্ষণে সমানভাবে যুক্ত রয়েছেন। তিনি ২০১৮ সাল থেকে পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটে মোশন গ্রাফিক্স ফ্যাকাল্টি এবং ২০২২ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগে গেস্ট ফ্যাকাল্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর ক্যারিয়ার শুরু হয় ২০০৭ সালে, আরটিভি-তে মোশন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে। এরপর ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি যমুনা টেলিভিশনে কাজ করেন, যেখানে তাঁর দক্ষতা ও কনসেপ্টচিন্তা মোশন গ্রাফিক্সকে একটি নতুন মাত্রা দেয়। সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই আজ তিনি হয়ে উঠেছেন দেশের টেলিভিশন ব্র্যান্ডিং ডিজাইনের অন্যতম শীর্ষ নাম। সম্প্রচার শিল্পের বাইরেও দেবাশীষ দাসের রয়েছে আরেকটি পরিচিতি—বই প্রকাশনা শিল্পে তিনি দাপটের সঙ্গে কাজ করছেন। তিনি প্রায় দুই শতাধিক বইয়ের প্রচ্ছদ ডিজাইন করেছেন এবং কাজ করেছেন দেশবরেণ্য লেখকদের সঙ্গে। দেশীয় টেলিভিশন শিল্পে সৃজনশীলতা, প্রযুক্তি এবং ব্র্যান্ডিং স্টাইলের সমন্বয় ঘটিয়ে তিনি প্রমাণ করেছেন—ভালো ডিজাইন শুধুই চমৎকার নয়, এটি কথা বলে, চেনায়, এবং ব্র্যান্ডের হৃদয়ে জায়গা করে নেয়। “স্টার বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড ২০২৫” এবং “এক্সেলেন্স ইন সাকসেস অ্যাওয়ার্ড ২০২৫” তাঁর পেশাগত জীবনের মুকুটে যুক্ত করেছে দুটি গৌরবোজ্জ্বল পালক, যা মোশন গ্রাফিক্স শিল্পে আগামী প্রজন্মের জন্য নিঃসন্দেহে এক অনুপ্রেরণার বাতিঘর হয়ে থাকবে।

No comments:

Post a Comment