false
রেফারি-বিতর্কে উত্তাপ ছড়িয়েছে আগেই। দুই দল মুখোমুখি হওয়ার আগেই অনেককিছু হয়েছে। সেভিয়ার প্লাজা নুয়েভায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বার্সেলোনা সমর্থকদের। রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকদের সঙ্গেও তাদের এক চোট হয়ে গেছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর বেরোয়। বাকি ছিল শুধু মাঠের লড়াইয়ে ‘আগুন জ্বলার’ অপেক্ষা। প্রথমার্ধের ২৮ মিনিটে গোলের ‘সেই আগুন জ্বাললেন’ পেদ্রি; বিরতির পর ৭০ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে। এরপর ৭৭ ও ৮৪ মিনিটে আরো দুই গোল। প্রথমটিতে চুয়ামেনি ২-১ গোলে এগিয়ে দেন রিয়ালকে, ফেরান তোরেসের পরের গোলে আবার সমতায় বার্সা (২-২)। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত এটাই স্কোরলাইন, যেখানে বার্সা প্রথমে এগিয়ে গিয়ে সমতায় ফিরতে বাধ্য হয়। এরপর রিয়ালকেও এগিয়ে গিয়ে সমতায় ফিরতে হয়েছে। অতিরিক্ত সময়ে সবাই যখন পেনাল্টি শুটআউটের প্রহর গুনছিলেন ঠিক তখনই শেষ মোচড়। একটু ভুল হলো। গোলের হিসাবে শেষ মোচড়, কিন্তু ম্যাচে চলমান নাটকের শেষ অঙ্ক বাকি তখনো। আসলে এটি শুধু ফাইনাল ছিল না; এল ক্লাসিকোও! থ্রিলারের সঙ্গে বিতর্কও সঙ্গী না হলে কী হয়? ১১৬ মিনিটে বার্সা ডিফেন্ডার জুলস কুন্দের গোলে আবারো এগিয়ে যায় বার্সা। লুকা মদরিচের ঢিলেঢালা পাসের সুযোগ নিয়ে ২৫ গজ দূর থেকে ডান পায়ের বুলেট গতির শটে গোল করেন ফরাসি ডিফেন্ডার। ৩-২ গোলে এগিয়ে গিয়ে শেষ পর্যন্ত এই স্কোরলাইনে জিতেছে বার্সাই। তবে কুন্দের গোলের পর শুরু হয় লাল কার্ড দেখার পালা! শেষ বাঁশি বাজার মিনিট দেড়েক আগে (১২৩ মিনিট) এমবাপ্পে ফ্রি কিক না পাওয়ায় বেঞ্চ থেকে রেফারির প্রতি তেড়ে যাচ্ছিলেন রিয়াল ডিফেন্ডার আন্তনিও রুডিগার। সতীর্থরা তাকে টেনে ধরে থামান। এরপর রিয়ালের বেঞ্চ থেকে কিছু একটা ছুঁড়ে মারা হয় মাঠে রেফারি রিকার্দো দে বুর্গোস বেনগোচেয়া প্রতি। রুডিগার নাকি অন্য কেউ ছুঁড়ে মেরেছেন পরিস্কার বোঝা যায়নি। এ সময় রুডিগারকে লাল কার্ড দেখান বেনগোচেয়া। কয়েক মুহূর্ত পর লুকাস ভাসকেজকেও। মৌসুমের তৃতীয় ক্লাসিকোতেও দর্শকদের খরচ করে মাঠে যাওয়া স্বার্থক। আর বিশ্বব্যাপী অসংখ্য মানুষের রাত জেগে টিভি সেটের সামনে বসাও বৃথা যায়নি। গত অক্টোবরে রিয়ালকে লিগে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে জানুয়ারিতে স্প্যানিশ সুপার কাপেও ৫-২ গোলে জিতেছে বার্সা। অর্থাৎ, এ মৌসুমে তিনবার রিয়ালের মুখোমুখি হয়ে ১২ গোল করল বার্সা। এর মধ্যে শেষ তিনটি গোল শুধু ৩২তম কোপা দেল রে জয়ের স্মারক নয়, রিয়ালের চোখে চোখ রেখে ঘুড়ে দাঁড়ানো কাকে বলে সেটি দেখিয়ে দেওয়াও। শেষ বাঁশি বাজার পর রিয়ালের খেলোয়াড়েরা রানার্স আপ পদক নেওয়ার সময় দুই পাশে দাঁড়িয়ে গার্ড অব অনারও দেন বার্সার খেলোয়াড়েরা। প্রথমার্ধ দেখে মনে হয়েছে, আগের দুটি ক্লাসিকোর মতো একপেশে হারের স্কোরকার্ড দেখা যেতে পারে। এই অর্ধে রীতিমতো পর্যুদস্ত হয়েছে রিয়াল। পরের অর্ধে সেটিই আবার কড়ায়-গন্ডায় ফিরিয়ে দিচ্ছিল। দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর আগে বদলি নামা এমবাপ্পের ফ্রি কিক থেকে গোল সেই চাপেরই প্রতিফলন। সাত মিনিট পরই কর্নার থেকে হেডে চুয়ামেনির গোলে আনন্দে ভেসে যায় লা কার্তোহা স্টেডিয়ামের সাদা গ্যালারি। তখন ২-১ গোলে এগিয়ে রিয়াল। আর সর্বোচ্চ মিনিট পনেরো, তারপরই ধরা দেবে পরম স্বস্তির এক জয়! ভুল। ৮৪ মিনিটে আবারও মোচড়। এবারেরটির জন্ম ফেরান তোরেসের পায়ে। লামিনে ইয়ামালের দারুণ এক পাস থেকে ডান প্রান্ত দিয়ে বুদ্ধিদীপ্ত ফিনিশিংয়ে তোরেস গোল করার সঙ্গে সঙ্গে গর্জে ওঠে বার্সা সমর্থকদের গ্যালারি। বার্সার বেঞ্চ থেকে খেলোয়াড়দেরও কেউ কেউ মাঠে ঢুকে কিংবা কেউ টাচলাইনে আনন্দে উদ্বেলিত। তখন জুড বেলিংহাম, আরদা গুলেরদের মুখে তাকানো যাচ্ছিল না। কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়, মৌসুমের পর মৌসুম প্রতিপক্ষকে দেখানো বেলিংহামদের নিজেদেরই ওষুধ কি না হজম করতে হচ্ছে, সেটিও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিদের কাছে! আরো কষ্টের ব্যাপার, দ্বিতীয়ার্ধে তা কড়ায়-গন্ডায় শোধ করতে করতে ম্যাচে ফিরে তারপর এগিয়েও গিয়েছিল রিয়াল। তোরেসের গোলটি যদি রিয়াল সমর্থকদের বুকে পেড়েকের আঘাত হয়, তবে বিরতির পর যোগ করা সময়ের ৬ মিনিটে সেই আঘাতের কষ্ট তাদের ভুলে যাওয়ার কথা! বক্সের বাঁ দিক থেকে বিপজ্জনকভাবে ঢুকে পড়া রাফিনিয়াকে বাধা দেন রিয়াল ডিফেন্ডার রাউল আসেনসিও, পড়ে যান বার্সার এই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার, পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি রিকার্দো দে বুর্গোস বেনগোচেয়া। ম্যাচের সেরা গোলটি প্রথমার্ধের ২৮ মিনিটে, পেদ্রির। অর্কেস্ট্রার কন্ডাক্টরের মতো খেলার সুরটা গেঁথে তারপর নিজে শেষ করেছেন। ভিনিসিয়ুস বল হারানোর পর মাঝমাঠ থেকে ডান প্রান্তে লম্বা পাস দেন ইয়ামালকে। বার্সা তারকা বল পায়ে এদিক-সেদিক করে একটু সময় নিয়েছেন পেদ্রির এগিয়ে আসার। বক্সের জটলা থেকে মাঝের ফাঁকা দৌড়ে আসা পেদ্রির সামনে পাস বাড়ান। ডান পায়ের চোখ ধাঁধানো শটে গোল! পেদ্রির গোলে এগিয়ে বার্সা প্রথমার্ধ শেষ করার পরই কেউ কেউ হয়তো ভেবেছিলেন শিরোপার নিষ্পত্তি হয়ে গেছে! কারণ নিরপেক্ষ ভেন্যুতে যত ক্লাসিকো হয়েছে, প্রথমার্ধে এগিয়ে থাকা দলই শেষ পর্যন্ত জিতেছে। সেভিয়াতেও তাই হলো, ২০২১ সালের পর প্রথম কোপা দেল রে জিতল বার্সা। ১৯৯০ সালের পর এই কাপ প্রতিযোগিতার ফাইনালে রিয়ালের বিপক্ষে এটাই তাদের প্রথম জয়। রিয়ালের আক্রমণে ধার বেড়েছে এমবাপ্পে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামার পর। প্রথমার্ধে সাতটি শটের মধ্যে বার্সার পোস্টে একটি রাখতে পেরেছে রিয়াল। বিরতির পর নির্ধারিত সময় পর্যন্ত শুধূ পোস্টেই সাতটি শট রেখেছে রিয়াল, যেটি বার্সা করেছে প্রথমার্ধে। পেদ্রির গোলের পর অফসাইডের কারণে একটি গোল বাতিলও হয় রিয়ালের। দুর্ভাগ্য বার্সাকেও তাড়া করেছে। ৪৪ মিনিটে তাদের কর্নার সবাইকে ফাঁকি দিয়ে সরাসরি রিয়ালের পোস্টে লেগেছে! কার্লো আনচেলত্তির দলের রক্ষণে ভোগার একটি কারণ হতে পারে ম্যাচের মাত্র ৮ মিনিটের মাথায় ডিফেন্ডার ফাঁরলা মেন্দির চোট পেয়ে মাঠ ছেড়ে যাওয়া। তার বদলি নামা ফ্রান গার্সিয়া প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। স্প্যানিশ সুপার কোপা জিতলেও বার্সা কোচ হিসেবে এটা হান্সি ফ্লিকের প্রথম বড় শিরোপা জয়। অন্যদিকে আনচেলত্তির রিয়াল কোচ হিসেবে শিরোপা জয়ের সম্ভবত শেষ সুযোগ ছিল। চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে আগেই বাদ পড়েছে রিয়াল। লা লিগায় তাদের সঙ্গে ৪ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে শীর্ষে ফ্লিকের বার্সা। আমারবাঙলা/এমআরইউ

থ্রিলার জয়ে শিরোপা ও ক্লাসিকো বার্সেলোনার
Tags
# Amarbangla Feed
# IFTTT
Share This
.png)
About News Desk
আসসালামু আলাইকুম।আমরা আপনাদের মাঝে নিয়ে এসেছি সকল চাকরি, সরকারি নোটিশ, লেখাপড়ার খবর, প্রশ্নপত্র এবং অন্যান্য খবর সবার আগে পেতে আমাদের আমাদের সাথে থাকুন।
ধন্যবাদ।
ইরানে হামলা চালালো ইসরায়েল!
News DeskJun 13, 2025শেখ হাসিনার সঙ্গে ঈদ করেছেন জয়, এখনো রয়েছেন ভারতে
News DeskJun 12, 2025৫ আগস্টের আগেই দেশে ফিরছেন তারেক রহমান
News DeskJun 12, 2025
Tags:
Amarbangla Feed,
IFTTT
Subscribe to:
Post Comments (Atom)